রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে পারব: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনও তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। এ সংকট নিরসনে এখন বিশ্বব্যাপী নানা আলোচনা চলছে। মিয়ানমার আলোচনা শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক চাপ ও আলোচনার মাধ্যমে আমরা ধীরে ধীরে এর সমাধান করতে পারব।
জাতিসংঘ সফর শেষে দেশে ফেরার পর আজ শনিবার সকালে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
৫ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে মানবিকতা প্রদর্শনের পাশাপাশি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বক্তৃতায় এই সংকটের প্রতি বিশ্ববাসীর মনোযোগ আকর্ষণ করায় শেখ হাসিনাকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ মানুষের জন্য। বিপন্ন মানুষকে আশ্রয় দেওয়া যেকোনো মানুষের দায়িত্ব। রোহিঙ্গারা মানবেতর জীবনযাপন করছিল। মিয়ানমার যেভাবে অত্যাচার চালাচ্ছিল, তাতে স্বাভাবিকভাবেই তাঁদের আশ্রয় দিতে হয়েছিল। বাংলাদেশের মানুষ মানবতা দেখিয়েছে। আমরা কারও সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করিনি। তবে যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ।
সংকট শুরু হওয়ার পরপরই মিয়ানমারের আকাশ সীমা লঙ্ঘন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল পরিস্থিতি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে ওই সময় মিয়ানমার নানা ভাবে উসকানি দিয়েছে। মিয়ানমারের উসকানিতে যাতে পা দেওয়া না হয়, এ জন্য সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছি।
অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরে দুর্নীতির কথা বলে যে অপমান করা হয়েছে, তার জবাব দিতে পেরেছি। বিশ্বব্যাংক আগে অপপ্রচার করেছে, কিন্তু তারা কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি। এখন তাঁদের দুর্নীতি অনুসন্ধানের তদন্ত দলের প্রধান ব্যক্তির বিরুদ্ধে হাজার হাজার পৃষ্ঠার নথি বেরোচ্ছে। সত্যের জয় তাৎক্ষণিক হয় না। মিথ্যার জয় তাৎক্ষণিক। একপর্যায়ে গিয়ে সত্যের জয় হয়। আমাদের জয় হয়েছে। বাংলাদেশকে হেয় করতে চেয়েছিল। পারেনি। দুর্নীতির কথা বলে ওই সময় বিশ্বব্যাংকের তদন্তের নামে মানসিক অত্যাচার করেছে। আমাদের বিশ্বাস ছিল দুর্নীতি হয়নি।
শরীরে অস্ত্রোপচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গলব্লাডারে অপারেশন হয়েছে। আমার বয়স ৭১ বছর। চিকিৎসক কয়েক সপ্তাহের জন্য সাবধান থাকতে বলেছেন। চলাফেরার ক্ষেত্রেও ছয় মাস সাবধানে থাকতে বলেছেন।
সুস্থ হয়ে পুরোদমে কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে শনিবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গণসংবর্ধনা দেওয়ার জন্য রাস্তায় বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীর উপস্থিতি দেখা গেছে। নেতা-কর্মীরা সকাল ৮টা থেকে রাস্তার পাশে জড়ো হতে শুরু করেন। নেত্রীকে বরণ করে নিতে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার নেতা-কর্মী ভিড় জমান। বিমানবন্দরেই মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা ও বিশিষ্ট নাগরিকেরা প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বলে অভিহিত করেন।
Reviewed by Xpromedia
on
October 06, 2017
Rating: 5
No comments